লো প্রেসারের ঔষধের নাম এবং লো প্রেসার এর লক্ষণ
আসসালামু আলাইকুম প্রিয় পাঠক, আজকে আমাদের আলোচ্য বিষয় লো প্রেসারের ঔষধের নাম এবং লো প্রেসার এর লক্ষণ। বর্তমানে আমাদেরকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকতে হয় সবসময়ই যার ফলে আমরা ঠিকমতো খাওয়া-দাওয়া করতে পারি না। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই আমরা সবসময় নিজেদের স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখতে পারি না।
যার ফলে আমাদের শরীর দুর্বল হয়ে যায় এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় লো প্রেসার এর স্বীকার হয়েছি। তাই আজকের এই আর্টিকেলটি বিশেষভাবে তাদের জন্য যারা নিজেদের খেয়াল সঠিকভাবে রাখতে পারেন না। সময় স্বল্পতা হোক বা ব্যস্ততা, যে কারণেই হোক না কেন আমরা নিজেদের স্বাস্থ্যের প্রতি খেয়াল রাখতে পারি না।
এরকম সময় লো প্রেসারে আক্রান্ত হওয়া অস্বাভাবিক কিছু না। আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো লো প্রেসারের ঔষধের নাম এবং লো প্রেসার এর লক্ষণ কি সেটাও জানতে পারবো। এছাড়া লো প্রেসার এর ঝুঁকি থেকে নিজেকে রক্ষা করার চেষ্টা করতে পারব। চলুন দেরি না করে জেনে নেওয়া যাক লো প্রেসারের ঔষধের নাম এবং লো প্রেসার এর লক্ষণ।
পোস্ট সূচিপত্র
- লো প্রেসারের ঔষধের নাম
- লো প্রেসার কাকে বলে
- লো প্রেসার এর লক্ষণ
- লো প্রেসারের চিকিৎসা
- লো প্রেসারে কি স্ট্রোক হয়
- লো প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি?
- কি খেলে প্রেসার বাড়ে-লো প্রেসারের ঔষধের নাম
- প্রথম রক্তচাপ সবসময় সর্বোচ্চ হয় কেন?
- উচ্চ রক্তচাপ বেশি ও নিম্ন রক্তচাপ কম হলে কি হয়?
- ভালো রক্তচাপ কি?
- লো প্রেসার হলে কি ক্ষতি হয়?
- লো প্রেসারের খাবার
- লো প্রেসারের সমাধান
- লো প্রেসারে কি হার্ট এটাক হয়?
- লো প্রেসারের কারণ
- লো প্রেসারের ক্ষতিকর দিক
- লো প্রেসার হলে করণীয় কি?
- লো প্রেসার কেন হয়?
- লো প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত
- FAQs: লো প্রেসার সংক্রান্ত কিছু সাধারণ প্রশ্ন
- লেখকের শেষ কথা
লো প্রেসারের ঔষধের নাম
আপনি কি লো প্রেসারের ওষুধের নাম সম্পর্কে জানতে ইচ্ছুক। যেহেতু কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে লো প্রেসার কমানো যায়। আপনি যেহেতু লো প্রেসারের ওষুধ সম্পর্কে জানতে চেয়েছেন তাই নিচে কিছু লো প্রেসারের ওষুধের নাম এবং এর বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বর্ণনা করা হলো। লো প্রেসারের ঔষধের নাম গুলো হলোঃ
- মিডোড্রিন
- এরিথ্রোপয়েটিন
- ফ্লড্রোকোর্টিসোন
- লপ্রেসর ৫০ এম জি ট্যাবলেট
মিডোড্রিনঃ মিডোড্রিন ওষুধটি রক্তচাপ হলে রক্তনালীকে সংকোচন করে রক্তচাপ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মিডোড্রিন ওষুধটি অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন আক্রান্ত ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
ফ্লড্রোকোর্টিসোনঃ এই ওষুধটি প্রস্রাবের মাধ্যমে লবণের ক্ষতিকর দিক নিরাশনে সাহায্য করে। সে কারণে পরবর্তীতে রক্তচাপের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে। ফ্লড্রোকোর্টিসোন ওষুধটি অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশন বা নিউরোজেনিক অর্থোস্ট্যাটিক হাইপোটেনশনের ব্যক্তিদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
এরিথ্রোপয়েটিনঃ এরিথ্রোপয়েটিন ঔষধটি এক ধরনের হরমোন। যেটি লাল রক্তকোষের উৎপাদনের পরিমাণ বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। যার ফলে লো প্রেসারের সমস্যায় প্রায় দূর হয়ে যায়।
লপ্রেসর ৫০ এম জি ট্যাবলেটঃ রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণের জন্য এবং সকল ব্যক্তিদের হৃদরোগ উন্নত করার জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আবার যাদের অতিরিক্ত টেনশন থাকে বা হাই টেনশন থাকে তাদের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে এই ওষুধটি।
লো প্রেসার কমানোর জন্য অপরের ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আশা করি এতক্ষণে আপনি বুঝতে পেরেছেন লো প্রেসারের ওষুধের নাম সম্পর্কে। লো প্রেসার এর লক্ষণ এবং লো প্রেসার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে পুরো আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ুন।
লো প্রেসার কাকে বলে
মানবদেহে রক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায় কমে যাওয়াকে লো ব্লাড প্রেসার বলে। সাধারণত শারিরীক এবং মানসিকভাবে সুস্থ একজন মানুষের রক্ত চাপ ১২০/৮০ হয়। লো ব্লাড প্রেশার অথবা হাই ব্লাড প্রসার দুটিই শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
লো ব্লাড প্রেসার হলো রক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কমে যাওয়া। লোভ ব্লাড প্রেসার হলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোক, কিডনির সমস্যা বা এ ধরনের কোন জটিল ও কঠিন রোগ হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় ঠিকই কিন্তু দীর্ঘদিন লো প্রেসারে আক্রান্ত থাকলে এটি শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘদিনের খাওয়া দাওয়ায় অনিয়ম, ঠিকমত না ঘুমানো পুষ্টিকর খাবার না খাবার ইত্যাদি নানা কারণে লো প্রেসার হতে পারে।
লো প্রেসার এর লক্ষণ
লো প্রেশার হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা যায়। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো মাথা ঘোরা, মাথা ব্যথা, ক্লান্তভাব, বমি বমি ভাব ইত্যাদি। তবে একটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে মাথা ব্যথার লো প্রেসারের লক্ষণ হলেও মাথার পেছনদিকে ব্যাথা উচ্চ রক্তচাপের প্রাথমিক লক্ষণ।
এছাড়া লো প্রেসার এর লক্ষণ গুলো হলো দুর্বলতা, মাথা ঝিমঝিম করা, বুক ধড়ফড় করা, হার্ট রেট হঠাৎ বেড়ে যাওয়া বা কমে যাওয়া, ঘুম ঘুম ভাব, অনেক শিক্ষার্থী লো ব্লাড প্রেসারের কারনে পড়া ঠিকমতো মুখস্থ করতে পারে না। লো ব্লাড প্রেসার যে কোন বয়সের মানুষেরই হতে পারে। দীর্ঘদিন ধরে লো ব্লাড প্রেসারে ভুগলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের জটিল রোগ বাসা বাঁধবে খুব সহজেই।
কিছু কিছু মানুষের সিস্টোলিক প্রেসার ১০০ মিলিমিটারের আশেপাশে হয় আর ডায়াস্টলিক প্রেসার ৬০ মিলিমিটারের আশেপাশে থাকে। যদি স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে তাদের মধ্যে কোন অসুবিধা না হয়, তবে এটি তাদের স্বাভাবিক প্রেসার এটি লোড ব্লাড প্রেসার নয়। অল্প বয়সী তরুণ তরুণীদের মধ্যেই সাধারণত যাদের ওজন তুলনামূলক কম তাদের মধ্যে এই সমস্যাটি বেশি দেখা যায়।
লো প্রেসারের চিকিৎসা
লো ব্লাড প্রেসার বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। আলাদা আলাদা সমস্যার জন্য আলাদা আলাদা সমাধান আছে। কারো শরীরে যদি পানি শূন্যতা তৈরি হয় অর্থাৎ ইলেকট্রোলাইট কমে যাবার কারণে কেউ যদি দূর্বল অনুভব করে তবে তাকে খাবার স্যালাইন পান করা উচিত।
তাৎক্ষণিক চিকিৎসা তথা ফার্স্ট এইড হিসেবে অনেক চিকিৎসকগণ এক চিমটি লবণ খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এছাড়াও ডাবের পানি লো ব্লাড প্রেসারে রোগীদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
লো প্রেসারে কি স্ট্রোক হয়
লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের স্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। ব্লাড প্রেসার দীর্ঘদিন লো থাকলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক জটিলতা দেখা দেয়। শরীর দুর্বল হয়ে যায়। কিন্তু জটিল ও কঠিন বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা সমূহ যেমন স্ট্রোক, হার্ট অ্যাটাক বা কিডনি জটিলতা এ ধরনের রোগের সম্ভাবনা অনেক কম থাকে।
লো প্রেসার কমানোর ঘরোয়া উপায় কি
হঠাৎ করে প্রেসার লো হয়ে গেলে আধা চা চামচ লবণ এক গ্লাস পানিতে গুলিয়ে পান করতে হবে। এতে তাৎক্ষণিক ব্লাড প্রেসার কিছুটা বেড়ে যাবে। এছাড়া তিনি ছাড়া এক কাপ ব্ল্যাক কফি খেলে প্রেসার কিছুটা বাড়বে। হালকা গরম এক গ্লাস দুধ খেলে লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের অনেক উপকার হয়।
লো ব্লাড প্রেসারের হলে ৪-৫ টি তুলসী পাতা এক গ্লাস পানিতে দিয়ে ৫-৬ মিনিট ফুঁটিয়ে রেখে দিতে হবে এবং সকালে বাসি পেটে পান করতে হবে। এছাড়া ডিম সেদ্ধ করে একটু বেশি করে লবণ দিয়ে খেলে অনেকটা আরাম পাওয়া যায়।
কি খেলে ব্লাড প্রেসার বাড়ে
অধিক মাত্রার কোলেস্টেরল উপস্থিত এমন খাদ্যের মধ্যে মাখন, চিংড়ি, ঝিনুক গবাদিপশুর যকৃৎ, ডিম বিশেষ করে ডিমের কুসুম উল্লেখযোগ্য। আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় সেটি হলো সোডিয়াম। খাবারে সোডিয়ামের পরিমাণ বাড়ালে ব্লাড প্রেসার এমনিতেই বেড়ে যায়।
প্রথম রক্তচাপ সবসময় সর্বোচ্চ হয় কেন?
রক্তচাপকে দুটি সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়। প্রথমটি উচ্চমান এবং দ্বিতীয় টি নিম্নমান। রক্তের উচ্চচাপকে সিস্টলিক (Systolic Pressure) চাপ বলে যার আদর্শ মান ১২০ মিলিমিটারের নিচে। আর নিম্নচাপকে ডায়াস্টোলিক (Diastolic Pressure) চাপ বলে। সাধারণত রক্তচাপটির আদর্শ মান ৮০ মিলিমিটারের নিচে হয়ে থাকে।
যেহেতু রক্তের উচ্চ চাপ অর্থাৎ সিস্টোলিক প্রেসারের (Systolic Pressure) আদর্শ মান ১২০ মিলিমিটারের নিচে এবং নিম্নচাপ অর্থাৎ ডায়াস্টোলিক প্রেসারের (Diastolic Pressure) আদর্শ সমান ৮০ মিলিমিটারের নিচে তাই প্রথম রক্তচাপ সব সময় সর্বোচ্চ হয়।
উচ্চ রক্তচাপ বেশি ও নিম্ন রক্তচাপ কম হলে কি হয়?
উচ্চ রক্তচাপকে নীরব ঘাতক হিসেবে গণ্য করা হয়। সম্প্রতি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা রিপোর্টে বলা হয়েছে স্ট্রোক ও করোনারি ধমনীর রোগ হবে বিশ্বের এক নম্বর মরণব্যাধি এবং দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে এটি মারাত্মক আকারে ছড়িয়ে পড়বে।
উচ্চ রক্তচাপের হৃদরোগ প্রধান কারণ হলো স্ট্রোক। রক্ত চলে জলের সময় রক্তনালিকাতে যে চাপ সৃষ্টি হয়, তাকে রক্তচাপ বলে। স্বাভাবিক এর চেয়ে বেশি রক্তচাপকে উচ্চ রক্তচাপ বলা হয়। একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ক্ষেত্রে সাধারণত সিস্টোলিক চাপ 120 মিলিমিটার নিচে এবং ডায়াস্টোলিক চাপ ৮০ মিলিমিটার পারদের নিচের মানকে সঠিক মান বলা হয়।
আর এই রক্তচাপ যখন অতিরিক্ত হয়, সাধারণত তখনই আমরা তাকে উচ্চ রক্তচাপ বলে থাকি। যদি কোন পরিবারের বাবা বা মায়ের উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে তার সন্তানদের উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। যাদের ধূমপানের অভ্যাস আছে তাদের উচ্চ রক্ত চাপ হতে পারে।
ভালো রক্তচাপ কি?
রক্ত প্রবাহের সময় ধমনীর গায়ে যে চাপ সৃষ্টি হয়, তাকে রক্তচাপ বলে। যখন হৃদপিন্ডের সংকোচন বা সৃষ্টির অবস্থায় ধমনীর গায়ে রক্তচাপের মাত্রা সর্বাধিক থাকে তখন তাকে বা এই অবস্থাকেই সিস্টোলিক চাপ (Systolic Pressure) বলে। এটিকে ডায়াস্টলিক চাপ (Diastolic Pressure) বলে।
চিকিৎসকদের মতে, পরিণত বয়সে একজন মানুষের আদর্শ রক্তচাপ (Blood Pressure) সাধারণত ১২০/৮০ মিলিমিটার মানের কাছাকাছি। রক্তচাপকে দুটি সংখ্যায় উল্লেখ করা হয়। প্রথমটি উচ্চমান এবং দ্বিতীয়টি নিম্নমান।
লো প্রেসার হলে কি ক্ষতি হয়?
দীর্ঘদিন ধরে লো ব্লাড প্রেসার বা হাইপোটেনশন ভুগলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। আমাদের মধ্যে প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী আমরা শুধুমাত্র উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করি। কিন্তু আমাদের মধ্যে যাদের লো ব্লাড প্রেসার আছে তারা কোন ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করি না।
লো ব্লাড প্রেসার ও শরীরের জন্য অনেক ভয়ঙ্কর। সঠিক সময়েই ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে এর থেকে অনেক জটিল ও কঠিন রোগের ও সৃষ্টি হতে পারে। লো প্রেসার থেকে অনেক সময় কিডনি ফেইলরের এর মত ভয়ানক ঘটনা ঘটতে পারে। তাই আমাদের সকলের উচিত লো প্রেসার এর ক্ষেত্রে সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা, নিজে সচেতন হওয়া এবং পরিবার, বন্ধু সবাইকে সচেতন করা।
লো প্রেসারের খাবার
লো ব্লাড প্রেসার হলে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় কমলা, মালটা এবং লেবু জাতীয় ফল রাখতে হবে। টক জাতীয় ফল অর্থাৎ যে সকল খাবারে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি আছে লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের বেশি বেশি খেতে হবে।
ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবারে পটাশিয়াম ম্যাগনেশিয়াম অনেক বেশি থাকে, যার ফলে সোডিয়ামের কার্যকারিতা ঠিক থাকে। তাই লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের জন্য ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার অত্যন্ত আবশ্যক। বেশি বেশি তরল জাতীয় খাবার খেতে হবে যেমন দুধ, ব্লাক কফি, ফলের রস, স্যুপ ইত্যাদি।
লো প্রেসারের সমাধান
প্রেসার লো হয়ে গেলে বেস্ট রেমিডি হলো পানি হাইড্রেড থাকতে হবে। পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি খেলে আমাদের ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্সড থাকবে। হঠাৎ করেই প্রেসার অনেক কমে গেলে শরীরে ইলেকট্রোলাইট ব্যালেন্স করার জন্য আধা চা চাম লবণ এক গ্লাস পানির সাথে মিশিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন অনেক চিকিৎসক।
তবে ডায়াবেটিস এর পেশেন্ট না হলে খাবার স্যালাইন খাওয়া যায়। ডায়াবেটিসের পেশেন্টের জন্য খাবার স্যালাইন উপযোগী না কারণ এতে প্রচুর পরিমাণে গ্লুকোজ থাকে।
লো প্রেসারে কি হার্ট এটাক হয়
লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের শরীর অত্যন্ত দূর্বল থাকে। লো ব্লাড প্রেসার হাই ব্লাড প্রেসার এর মতো ভয়ানক না হলেও এটিও যথেষ্ট বিপদজনক একটি রোগ। লো ব্লাড প্রেসার এর রোগীরা অনেক সময় হার্ট এটাকে শিকার হন। যাদের আগে থেকে হার্টের সমস্যা থাকে তারাই মূলত এই সমস্যার শিকার হয়ে থাকেন।
লো প্রেসারের কারণ
লো ব্লাড প্রেসার বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। অনেক সময় দেখা যায় বিভিন্ন রোগের ওষুধ এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হিসেবে অনেকেই লো ব্লাড প্রেসারে ভোগেন। আবার বর্তমান যুগের তরুণ তরুণীর মধ্যে পছন্দের হিরো হিরোইনের মতো ফিগার পাওয়ার জন্য ডায়েট কন্ট্রোল করার একটা প্রবণতা দেখা যায়।
ভুল ডায়েট কন্ট্রোল এর কারণে দেহ প্রয়োজনীয় নিউট্রিশন না পেলে লো ব্লাড প্রেসারে ভুগতে হয়। এছাড়াও কাজের চাপে বা অন্যান্য কারণে দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলে অথবা দীর্ঘ সময় রোধে থাকার কারণেও লো ব্লাড প্রেসার হয়।
লো প্রেসারের ক্ষতিকর দিক
লো প্রেসারের অনেক ক্ষতিকর দিক রয়েছে। আপাত দৃষ্টিতে সেগুলো খুব বেশি সমস্যা মনে না হলেও দীর্ঘ দিন থেকে ভুগতে থাকলে তা এক সময় জটিল ও কঠিন রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আজকের এই আর্টিকেলে লো ব্লাড প্রেসারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
- মাথা ব্যথা হয়।
- বমি বমি ভাব হয়।
- শরীর দুর্বল হয়ে যায়।
- পড়া মনে থাকে না।
- মাথা ঘোরা বা অজ্ঞান হয়ে যায়।
- মাথা ঝিমঝিম করে
- বুক ধড়ফড় করে
লো প্রেসার হলে করণীয় কি
লো ব্লাড প্রেসার হলে অনেকেই আতঙ্কিত হয়ে যায়। আবার অনেক সময় আমরা বুঝে উঠতেই পারি না যে আমাদের কি করা উচিত। লো ব্লাড প্রেসার হলে ঘরোয়া উপায়ে তাৎক্ষণিক সুস্থতা লাভের জন্য বেশ কিছু ঘরোয়া টোটকা রয়েছে।
যেগুলোর মাধ্যমে আমরা খুব সহজেই লো ব্লাড প্রেসারের রোগীদের চিকিৎসা করে সাময়িকভাবে সুস্থ করতে পারি। আর দেরি না করে চলুন জেনে নেওয়া যাক লো ব্লাড প্রেসারের ক্ষেত্রে করণীয় কি কি।
- এক গ্লাস পানিতে আধা চা চামচ লবণ মিশিয়ে পান করতে হবে।
- সল্টেড পনির এবং বাজারে যেসব সল্টেড কুকিজ পাওয়া যায় সেগুলো খেতে হবে।
- হালকা গরম দুধ পান করতে হবে।
- ব্লাক কফি খেতে হবে।
- গরম গরম স্যুপ খেতে হবে।
- ডিম সেদ্ধ বেশি করে লবণ দিয়ে খেতে হবে।
লো প্রেসার কেন হয়
লো ব্লাড প্রেসার বিভিন্ন কারণে হয়ে থাকে। মানুষের জীবন যাত্রার ধরনের সাথে ব্লাড প্রেসারের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। মূলত লাইফ স্টাইল এর ওপরই একজন মানুষের ব্লাড প্রেসার নির্ভর করে। যে সকল কারনে লো ব্লাড প্রেসার হয় সেগুলো জানা যাক।
- দীর্ঘদিন পুষ্টিকর খাবার না খেলে।
- দীর্ঘ সময় রোদে থাকলে।
- অনিয়ন্ত্রিতভাবে ডায়েট কন্ট্রোল করলে।
- অতিরিক্ত কাজের চাপ বা মানসিক চাপের কারণে লো ব্লাড প্রেসার হতে পারে।
- দীর্ঘ সময় না খেয়ে থাকলেও লো ব্লাড প্রেসার হয়।
লো প্রেসার হলে কি খাওয়া উচিত
লো প্রেসার হলে কি কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত এ সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই কোন স্পষ্ট ধারণা নেই। লো ব্লাড প্রেসার হলে ইলেকট্রোলাইট বৃদ্ধি পায় এ ধরনের খাবার বেশি বেশি খাওয়া উচিত। কারণ পানি শূন্যতা তৈরি হলে অনেক সময় লো ব্লাড প্রেসার হয়। চলুন দেখে নেওয়া যাক লো ব্লাড প্রেসার হলে কি ধরনের খাবার খাওয়া উচিত।
- প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে।
- খাবার স্যালাইন খেতে হবে বেশি বেশি। তবে রোগীর ডায়াবেটিস থাকলেও স্যালাইন খাওয়া যাবে না কারণ এখানে ইলেকট্রোলাইট থাকে গ্লুকোজ মাধ্যমে। তাই এক্ষেত্রে লবণ পানি খেতে হবে।
- রাতে এক গ্লাস গলম পানিতে ৪-৫ টা তুলসী পাতা দিয়ে ৫-৬ মিনিট ফুটিয়ে নিয়ে রেখে দিতে হবে এবং সকালে বাসি পেটে পান করতে হবে।
- ডিম খেতে হবে বিশেষ করে ডিমের কুসুম।
- ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার(মাল্টা, লেবু, কমলা) খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
FAQs: লো প্রেসার সংক্রান্ত কিছু সাধারণ প্রশ্ন
প্রশ্নঃ০১ প্রেসার লো হলে কোন ঔষধ খেতে হবে?
উত্তরঃ প্রেসার লো হলে Lopresor 50 mg tablet খেতে হবে।
প্রশ্নঃ০২ প্রেসার কমে গেলে কি স্ট্রোক হয়?
উত্তরঃ না, প্রেসার কমে গেলে স্ট্রোক হয় না।
প্রশ্নঃ০৩ কি খাবার খেলে ব্লাড প্রেসার বাড়ে?
উত্তরঃ কোলেস্টোরলযুক্ত খাবার খেলে ব্লাড প্রেসার বেড়ে যায়।
প্রশ্ন০৪ঃ ৭৪ বছর বয়সী মহিলার স্বাভাবিক রক্তচাপ কত?
উত্তরঃ ৭৪ বছর বয়সী মহিলার স্বাভাবিক রক্তচাপ হলো ১২০/৮০।
প্রশ্নঃ০৫ নিম্ন রক্তচাপ কত?
উত্তরঃ নিম্ন রক্তচাপ হলো ১০০/৬০ বার এর নিচে।
প্রশ্নঃ০৬ প্রবীণ নাগরিকদের জন্য রক্তচাপ 150/90 স্বাভাবিক?
উত্তরঃ না, প্রবীণ নাগরিকদের জন্য রক্তচাপ 150/90 স্বাভাবিক না। ১৫০/৯০ হলো উচ্চ রক্তচাপ।
প্রশ্নঃ০৭ কয়েক মিনিটের মধ্যে রক্তচাপ ওঠানামা করে কেন?
উত্তরঃ পরিশ্রম, দুশ্চিন্তা করলে কয়েক মিনিটের মধ্যে রক্তচাপ ওঠানামা করে।
প্রশ্ন০৮ঃ 140/90 রক্তচাপ 50 বছর স্বাভাবিক?
উত্তরঃ না, ১৪০/৯০ হলো উচ্চ রক্তচাপ।
প্রশ্ন০৯ঃ 152 ওভার 66 কি ভালো রক্তচাপ?
উত্তরঃ না,152 ওভার 66 কি ভালো রক্তচাপ না।
প্রশ্ন১০ঃ প্রথম রক্তচাপ সবসময় সর্বোচ্চ হয় কেন?
উত্তরঃ প্রথম রক্ত চাপ সবসময় সর্বোচ্চ হয় কারণ এর আদর্শ মান ১২০ মিলিমিটারের নিচে।
প্রশ্ন১১ঃ লো প্রেসার হলে কি ক্ষতি হয়?
উত্তরঃ লো ব্লাড প্রেসার থেকে কিডনি ফেইলর হতে পারে।
প্রশ্ন১২ঃ ভালো রক্তচাপ কি?
উত্তরঃ ১২০/৮০ হলো ভালো রক্তচাপ।
প্রশ্ন১৩ঃ রক্তচাপের কোন সংখ্যাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ?
উত্তরঃ রক্তচাপের "রক্ত চাপ পরিমাণ" সংখ্যাটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।
প্রশ্ন১৪ঃ রক্তচাপ 140/70 স্বাভাবিক?
উত্তরঃ না, ১৪০/৭০ স্বাভাবিক রক্তচাপ নয়।
প্রশ্ন১৫ঃ রক্তচাপ 110/70 স্বাভাবিক?
উত্তরঃ হ্যাঁ, রক্তচাপ 110/70 স্বাভাবিক।
প্রশ্ন১৬ঃ নিম্ন রক্তচাপ বলতে কি বুঝায়?
উত্তরঃ নিন্ম রক্তচাপ হলো সিস্টোলিক প্রেসার ১০০ এর কম এবং ডায়াস্টলিক প্রেসার ৬০ এর কম ব্লাড প্রেসার।
প্রশ্ন১৬ঃ উচ্চ রক্তচাপের সংখ্যা কত?
উত্তরঃ সিস্টোলিক প্রেসার ১৩০ এর বেশি এবং ডায়াস্টলিক প্রেসার ৯০ এর বেশি হলো উচ্চ রক্তচাপ।
প্রশ্ন১৭ঃ 94/47 রক্তচাপ খুব কম?
উত্তরঃ হ্যাঁ, 94/47 রক্তচাপ খুব কম। এটি লো ব্লাড প্রেসার।
শেষ কথা
লো ব্লাড প্রেসার বা হাইপোটেনশনকে আমরা খুব একটা গুরুত্ব দেই না। আমরা হাই ব্লাড প্রেসার হলে যে সচেতনতা অবলম্বন করি তার অর্ধেক ও লো ব্লাড প্রেসারের ক্ষেত্রে করি না। অথচ হাই ব্লাড প্রেসার যদি নীরব ঘাতক হয় তবে লো ব্লাড প্রেসার ও কোন অংশে কম ক্ষতিকর না।
লো ব্লাড প্রেসারের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে আমাদের জানতে হবে। সচেতন হতে হবে। নিজে সচেতন হওয়ার পাশাপাশি পরিবার, আত্মীয় স্বজন এবং বন্ধুদেরকেও এ বিষয়ে সচেতন করি জরুরি। অনেকেই লো ব্লাড প্রেসার হলে কি কি ঔষধ খেতে হবে এবং লো ব্লাড প্রেসারের লক্ষণ কি কি তা জানতে চান।
আশা করছি এই আর্টিকেলটির মাধ্যমে আপনাদের কাঙ্ক্ষিত তথ্য আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছি। এই আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার মাধ্যমে লো প্রেসারের ওষুধের নাম এবং লোকেশন এর লক্ষণ সম্পর্কে সঠিক ধারণা পেয়েছেন।
আপনার কাছে যদি এই আর্টিকেলটি পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে আপনাদের বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করে দিয়ে, নিচের কমেন্ট বক্সে ক্লিক করে একটি কমেন্ট করে যাবেন। ধন্যবাদ। আর্টিকেলটি লিখেছেন, [মাহামুদুল হাসান জিহাদ]
Comment in accordance with Help Crown's Privacy Policy. Every comment is reviewed.
Help Crown - গোপনীয়তা নীতি অনুসারে মন্তব্য করুন। প্রতিটি মন্তব্য পর্যালোচনা করা হয়.
comment url